শৈশবের প্রেম
শৈশবের প্রেম
শৈশবে প্রথম যে মেয়েটার প্রেমে পড়েছিলাম তার নামটা এখন মনে নেই ।
তবে প্রেমে পড়ার ঘটনাটা মনে আছে ।
আমার এক প্রতিবেশি দাদা তার মেয়ে বাড়ি যাবে । আমাকে সাথে নিবে । আমাকে একবারের বেশি বলতে হয়নি তবে মাকে অনেক বুজিয়ে শুনিয়ে রাজি করিয়েছেন ।
তখন ছিল বর্ষাকাল । যাতায়াতের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম ছিল নৌকা । তো নৌকায় করেই দাদার মেয়ের বাড়ি রওনা হলাম । কিছু দূর যাওয়ার পরই টের পেলাম আমাকে এতো জামাই আদরে নিয়ে আসার আসল কারন ।
সারাটা পথ আমাকেই নৌকা বেয়ে নিয়ে যেতে হল ।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর আমরা পৌছলাম ।
অনেক ক্লান্ত ছিলাম । কিন্তু আমার সারাটা পথের ক্লান্তি কেউ যে এক নিমিষেই শেষ করে দিতে পারে, জানা ছিল না । আমরা ঘরে ঢোকার পর সে যখন আসল, তার দিকে তাকিয়ে আমি সব ভুলে গেলাম ।
তার চুল, তার হাসি, তার চোখ, তার চাহনী, সব মিলিয়ে একটা মানুষ যে এত্তো কিউট হতে পারে, আমার কল্পনায় ছিল না ।
সে ছিল দাদার মেয়ের মেয়ে, মানে নাতনী ।
সেখানে দুইদিন ছিলাম ।
দুটোদিন মনে হয় স্বপ্নের মধ্যেই কেটে গেছে ।
ও আমার সেইম এইজের ছিল । সারাক্ষণ কাছাকাছি, নানা বিষয়ে গল্প, আমার বোকা বোকা কথা আর ওর ভূবন ভোলানো হাসি । সময় যে কখন ফুরিয়ে গেল টের পাইনি ।
চলে আসার সময় খুব খারাপ লাগছিল ।
ছেড়ে আসতে মন চায়নি ।
মন চাইছিল থেকে যাই কিংবা সাথে করে নিয়ে আসি । কিন্তু কোনটাই সম্ভব হয়নি ।
চলে এলাম । কিন্তু মন জুড়ে তার আবেশ রয়ে গেল বহুদিন ।
অনেক স্বপ্ন দেখলাম, কল্পনায় অনেক ছবি আঁকলাম ।
সেই বর্ষায় অনেক চেষ্টা করেছি তার কাছাকাছি আরেকবার যাওয়ার ।
কিন্তু সম্ভব হয়নি ।
আর কখনই সম্ভব হয়নি ।
বর্ষা চলে গেল । আমার স্বপ্ন আর কল্পনায় আঁকা ছবির রং ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে গেল ।
শৈশবের প্রেম বর্ষার জলের মতোই, খুব দ্রুত আসে আবার দ্রুতই চলে যায় ।
No comments