Header ads

জোকাস্টা কে? 'ইডিপাস' নাটক অবলম্বনে জোকাস্টা চরিত্রের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।। Jocasta: A tragic woman in the play 'Oedipus'

 জোকাস্টা কে? 'ইডিপাস' নাটক অবলম্বনে জোকাস্টা চরিত্রের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।। Jocasta: A tragic woman in the play 'Oedipus'

জোকাস্টা: 'ইডিপাস' নাটকের এক ট্র্যাজিক নারী

পরিচয়:

জোকাস্টা ছিলেন সফোক্লিস রচিত গ্রিক ট্র্যাজেডি 'ইডিপাস' নাটকের একটি কেন্দ্রীয় চরিত্র। তিনি ছিলেন  থিবসের রানী এবং রাজা লেয়াসের স্ত্রী; ইডিপাসের মাতা এবং পরবর্তীতে নিয়তি ও ঘটনাচক্রে ইডিপাসের স্ত্রী । জোকাস্টা স্পার্টোই ইচিয়ানের বংশধর হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি মেনোসিউসের কন্যা এবং থিবসের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাডমাসের নাতনি ছিলেন। নাটকের ঘটনাপ্রবাহ জোকাস্টার জীবনের ট্র্যাজেডি, দুঃখ, এবং অজানা ভাগ্যের সাথে গভীরভাবে জড়িত।

চরিত্রের বৈশিষ্ট্য:

  • জটিল ও বহুমুখী: জোকাস্টা একজন জটিল ও বহুমুখী চরিত্র। একদিকে তিনি শক্তিশালী ও স্বাধীন নারী, অন্যদিকে তিনি দুঃখ ও হতাশার শিকার।
  • দায়িত্ববোধ: রাণী হিসেবে তিনি তার রাজ্য ও পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধশীল ছিলেন। ক্রীয়নের প্রতি ইডিপাসের অবিশ্বাস দেখে রাণী বলেছেন, "ক্রীয়ন শপথ নিয়েছে। দেবতার নামে যে শপথ নেয়া হয়েছে, শপথের অমর্যাদা কর না। তাকে বিশ্বাস কর ইডিপাস।"
  • শক্তিশালী ও স্বাধীন: জোকাস্টা ছিলেন একজন শক্তিশালী ও স্বাধীন নারী। রাজপরিবারের একজন সদস্য হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।
  • জ্ঞানী ও বিচক্ষণ: একজন রানী হিসেবে জোকাস্টা ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী ও বিচক্ষণ। রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে তার মতামত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। রাজা লেয়াসের হত্যাকারী বিষয়ে ইডিপাস, ক্রীয়ন ও টাইরেসিয়াসের মধ্যে বাক বিতণ্ডা চলাকালে জোকাস্টা তাদের শান্ত করতে চেয়েছেন, "তোমাদের কি কোথাও বিবেচনা নেই? দেশের চরম দুর্দশার সময় ব্যক্তিগত বিরোধকে বড় করে তুলছ।" 
  • বুদ্ধিমতী ও দূরদর্শী: জোকাস্টা ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী ও দূরদর্শী। তিনি রাজ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন বিষয় সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং তা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন। নিয়তির নিষ্ঠুর খেলা প্রত্যক্ষ করে জোকাষ্টা ইডিপাসকে জন্মরহস্য উদঘাটনে নিবৃত্ত করতে চেয়েচেন, "কেন জিজ্ঞেস করছ। আর কোন প্রশ্ন কর না, আর কারো কথাও শুন না। দেবতার দোহাই, তুমি আর কিছু করতে যেও না।" .............. "অন্ধ- তুমি অন্ধ! হায়রে দুর্ভাগা! তুমি যেন কখনো না জানো তুমি কে?" 
  • দুঃখিত ও ট্র্যাজিক: জোকাস্টার জীবন ছিল অত্যন্ত দুঃখ ও ট্র্যাজেডি দীর্ঘ। অজান্তে নিজের পুত্র ইডিপাসকে বিয়ে করা এবং তার সন্তানদের জন্মদান করার পর তিনি ভয়ানক সত্য সম্পর্কে জানতে পারেন। তার মর্ম যন্ত্রণার সামান্য প্রকাশ, "আমার বেদনা এ মুহূর্তে যে কি তা কেউ জানল না।"  এই আঘাতের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন।
  • ট্র্যাজিক নায়িকা: জোকাস্টাকে ট্র্যাজিক নায়িকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় কারণ সে তার ভাগ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়।

'ইডিপাস' নাটকে জোকাস্টার ভূমিকা:

  • ইডিপাসের স্ত্রী ও মা: জোকাস্টা ইডিপাসের স্ত্রী এবং অজান্তে তার মাও ছিলেন। এই অজানা সম্পর্কই নাটকের ট্র্যাজেডির মূল কারণ।
  • কাহিনীর চালিকাশক্তি: জোকাস্টার ভূমিকা কেবল একজন স্ত্রী ও মা নয়। তিনি নাটকের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহকে এগিয়ে নিয়ে যান।
  • দর্শকের সহানুভূতি আকর্ষণকারী: জোকাস্টার ট্র্যাজিক পরিণতি দর্শকের মনে সহানুভূতি ও করুণা জাগ্রত করে।
  • ভাগ্যের সাথে লড়াইয়ের প্রতীক: জোকাস্টা মানুষের ভাগ্যের সাথে লড়াইয়ের প্রতীক। সে তার ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায়, কিন্তু অবশেষে ব্যর্থ হয়।

উপসংহার:

জোকাস্টা 'ইডিপাস' নাটকের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ট্র্যাজিক চরিত্র। একজন রাণী, স্ত্রী ও মা হিসেবে তার ভূমিকা জটিল ও বহুমুখী।   তার শক্তি, দুর্বলতা, ভুল ও শাস্তি দর্শককে নীতি, নৈতিকতা ও ভাগ্যের বিষয়ে ভাবতে বাধ্য করে। ট্র্যাজেডি, দুঃখ, এবং নৈতিক দ্বন্দ্বের মাধ্যমে সে মানবজীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে।  ট্র্যাজেডির একজন নায়িকা হিসেবে জোকাস্টা সাহিত্যকর্মে অমর হয়ে আছেন।

ক্রীয়ন কে? ক্রীয়ন চরিত্র সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ। 





No comments

Theme images by Maliketh. Powered by Blogger.