Header ads

কালিদাসের 'মেঘদূত' কাব্যের যক্ষপ্রিয়া চরিত্রের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।। Yakshapriya in Kalidasa's 'Meghdoot'

কালিদাসের 'মেঘদূত' কাব্যের যক্ষপ্রিয়া চরিত্রের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।। Yakshapriya in Kalidasa's 'Meghdoot'

যক্ষপ্রিয়া: বিশ্বস্রষ্টার প্রথম যুবতীর প্রতিমা

    কালিদাস রচিত 'মেঘদূত'-এর যক্ষপ্রিয়া কেবল এক নারী নন, বরং প্রেম, বিরহ, এবং মানবিক বেদনার অমর প্রতীক। বুদ্ধদেব বসুর অনুবাদে 'মেঘদূত' বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে ওঠেছে এবং যক্ষপ্রিয়ার চরিত্র আরও উজ্জ্বলভাবে ফুটে ওঠেছে। যক্ষপ্রিয়া, রামগিরি পর্বতে নির্বাসিত যক্ষের প্রিয়তমা স্ত্রী। মেঘদূত কাব্যে তার চরিত্র বিরহ-বেদনায় কাতর ও একাকী নারীরূপে ফুটে উঠেছে। যক্ষ তার প্রিয়তমা যক্ষপ্রিয়ার প্রতি অপার ভালোবাসা ও তীব্র প্রতীক্ষার বেদনা প্রকাশ করে মেঘকে দূত করে বার্তা পাঠায়।

   

    বিখ্যাত 'মেঘদূত' কাব্যে কবি কালিদাস যক্ষপ্রিয়াকে 'বিশ্বস্রষ্টার প্রথম যুবতীর প্রতীমা' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যক্ষপ্রিয়া একাকি অলকাপুরীতে বাস করেন। তিনিও যক্ষের মতো বিরহিনী। যক্ষ মেঘের কাছে তার প্রিয়ার বর্ণনা দিয়েছেন তন্বী, শ্যামা, সূক্ষ্মদন্তিনী, নিম্ননাভি, ক্ষীণমধ্যা হিসেবে। তার প্রিয়ার চোখে আছে হরিণের চাহনি, পাঁকা রক্তিম ফলের মতো দুঠোঁট রাঙা। সবকিছু মিলিয়েই তার প্রিয়া যেন বিশ্বস্রষ্টার প্রথম যুবতীর প্রতিমা।

    যক্ষপ্রিয়ার পক্ষেও যক্ষ বিনা প্রাণ ধারণ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ কাব্যে উত্তর মেঘের শেষাংশে যক্ষ পত্মীর বিরহের এক হৃদ্দিক বর্ণনা দিয়েছেন যক্ষ নিজেই মেঘের কাছে। মেঘ অলকায় গিয়ে যক্ষ পত্মীকে কেমন দেখবে, তার বিরহে যক্ষ পত্মী কিরূপ অবস্থায় আছে তারই বর্ণনার মধ্যে দিয়ে আমাদের কাছে  স্পষ্ট হয়েছে যক্ষ পত্মীর রিহের স্বরূপ। তার চোখে কোন ঘুম নেই, চাঁদের আলো দেখলে সে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। খোপা থেকে ফুলের মালা ছিঁড়ে ফেলেছে। 

    যক্ষপ্রিয়া ছিলেন অপূর্ব সুন্দরী। তার সৌন্দর্যের বর্ণনা কাব্যে বিস্তারিতভাবে দেওয়া হয়েছে। মেঘের কাছে তার রূপের বর্ণনা করতে গিয়ে যক্ষ বলেছেন, "তার চোখ হরিণের চোখের মত, ভ্রূ রমনীয়, কপাল মসৃণ, গাল লাল, ঠোঁট কোমল, দাঁত মুক্তার মত, ঘাড় সুন্দর, স্তন উন্নত, কোমর সরু, পদপদ্ম সুন্দর।" যক্ষপ্রিয়া ছিলেন একগুণাবতী নারী। সে ছিলেন ধার্মিকা, সতী, পতিব্রতা, সহানুভূতিশীল, দানশীল।

    যক্ষ তার প্রিয়তমা যক্ষপ্রিয়ার থেকে দীর্ঘদিন দূরে রয়েছেন। একাকীত্ব ও বিরহের যন্ত্রণায় যক্ষপ্রিয়া কাতর। সে দিনরাত কাঁদে, ঘুমাতে পারে না, খেতে পারে না। তার মন সবসময় যক্ষের কথা ভাবতে থাকে।

    বুদ্ধদেব বসু অনূদিত 'মেঘদূত'-এ যক্ষপ্রিয়া চরিত্র বিরহ-বেদনায় কাতর ও একাকী নারীরূপে ফুটে উঠেছে। তিনি যক্ষপ্রিয়ার মানসিক বেদনা, তার স্বামীর প্রতি অটুট বিশ্বাস, এবং প্রকৃতিপ্রেমকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তার বেদনা, তার অপেক্ষা, তার ধৈর্য আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা। তার চরিত্র পাঠকের মনে গভীর সহানুভূতি ও করুণা জাগ্রত করে।

মেঘদূত কাব্যের যৌনতার বিষয়গত সার্থকতা আলোচনা কর ।। Sexuality in 'Meghdoot' poetry

No comments

Theme images by Maliketh. Powered by Blogger.