Header ads

উপভাষা এবং উপভাষার বৈশিষ্ট্য ।। Dialects and Dialect Characteristics

উপভাষা এবং উপভাষার বৈশিষ্ট্য ।। Dialects and Dialect Characteristics

উপভাষা এবং উপভাষার বৈশিষ্ট্য:

উপভাষা (Dialect): অঞ্চলভেদে ভাষার পার্থক্যকে বলা হয় উপভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা। অন্যভাবে বলা হয়, প্রমিত বা মান ভাষার (standard language) পাশাপাশি প্রচলিত অঞ্চল বিশেষে ব্যবহৃত ভাষাকে বলা হয় আঞ্চলিক ভাষা। এই আঞ্চলিক ভাষাই হলো উপভাষা। পৃথিবীর সব ভাষারই এরূপ আঞ্চলিক ভাষা লক্ষ করা যায়। উপভাষাই ভাষার প্রাণরূপে পরিগণিত হয়। সাধারণত প্রমিত ভাষা ভৌগোলিক ব্যবধান, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পার্থক্যের কারণে উপভাষার সৃষ্টি হয়। উপভাষার ব্যবহার কেবল বিশেষ অঞ্চলে জনসাধারণের মধ্যেই সীমিত থাকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক ও ধর্মীয় কারণে বিভিন্ন উপভাষার সৃষ্টি হয়েছে। 

 উপভাষার বৈশিষ্ট্য: 

১. উপভাষা হলো ভাষার আঞ্চলিক রূপ।

২. ভৌগোলিক বা আঞ্চলিকভাবে উপভাষার বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রিত হয়।

৩.আঞ্চলিকভাবেই পৃথক বা সামাজিকভাবে পৃথক জনগোষ্ঠী থেকেই উপভাষার আবির্ভাব।

৪. উপভাষার উচ্চারণ ও শব্দভাণ্ডারে বৈচিত্র্য থাকে।

৫. উপভাষা অধ্যয়নের মাধ্যমে কোনো বিশেষ অঞ্চলের মানুষের বৈচিত্র্যপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। 

৬. কোন উপভাষা যখন স্বতন্ত্র্য বেশি হয় এবং তা দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় তখন তা আদর্শ ভাষায় পরিণত হয়। 

৭. প্রমিত ভাষার সঙ্গে উপভাষার পার্থক্য ধ্বনি, রূপমূলের উচ্চারণ ও ব্যাকরণগত প্রভৃতি ক্ষেত্রে। 

৮. সাধারণত প্রমিত ভাষায় ভাষীর সংখ্যা বৃদ্ধি, ভৌগোলিক ব্যবধান এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক শ্রেণিবিন্যাসের কারণে উপভাষার সৃষ্টি হয়। 

৯. প্রমিত ভাষা দেশের সর্বত্র ব্যবহার হয়। কিন্তু উপভাষা কেবল বিশেষ অঞ্চলের জনসাধারণের মধ্যেই সীমিত থাকে। 

   উপভাষা হচ্ছে ভাষার প্রাণ। উপভাষা চর্চার মধ্য দিয়েই ভাষা বৈচিত্র্যের বিভিন্ন দিক আলোচনা করা যায়। প্রতিটি ভাষার আঞ্চলিক বৈচিত্র্য আছে। একই ভাষার বিভিন্ন আঞ্চলিক বৈচিত্র্য হলো উপভাষা। এ- আঞ্চলিক বৈচিত্র্য বা উপভাষা নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। উপভাষাতত্ত্ব হচ্ছে ভাষাবিজ্ঞানের একটি প্রায়োগিক শাখা। বর্তমানে উপভাষাতত্ত্বে ভাষার মৌলিক উপাদানগুলি আলোচিত ও বিশ্লেষিত হয়ে থাকে। ভাষাবিজ্ঞানীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য মূলত এই উপভাষার মধ্যে নিহিত থাকে। তাই উপভাষা আলোচনার গুরুত্ব রয়েছে। উপভাষা নিয়ে যে তত্ত্বে আলোচনা করা হয় তাকে বলা হয় উপভাষাতত্ত্ব (Dialectology) 

No comments

Theme images by Maliketh. Powered by Blogger.