সামাজিক উপভাষা বলতে কী বোঝায়? What is social dialect?
সামাজিক উপভাষা:
সমাজের কোনো বিশেষ শ্রেণির ভাষাকে সামাজিক উপভাষা বলে। অঞ্চলভেদে যেমন একই ভাষার মধ্যে পার্থক্য থাকে, তেমনি সামাজিক স্তরভেদেও একই ভাষী জনসমষ্টির মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। সমাজ অনুসারে ভাষার পার্থক্যকেই বলা হয় সামাজিক উপভাষা। সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি এবং পেশার লোক বাস করে। যেমন: একজন শিক্ষিত মৌলভী, একজন অধ্যাপক, একজন ব্যারিস্টার, একজন রাজনৈতিক নেতা, একজন শ্রমজীবী এরূপ বিভিন্ন শ্রেণী সমাজে বাস করে। এসব মানুষের শব্দ উচ্চারণে ও ভাষা ব্যবহারে বেশ পার্থক্য দেখা যায়। একই ভাষার মধ্যে সামাজিক স্তরভেদে এরূপ পার্থক্যে বলা হয় সামাজিক উপভাষা। যেমন- একজন অধ্যাপক এবং একজন কৃষক একই ভাষা বললেও, তাদের ভাষা ব্যবহারে অনেক পার্থক্য থাকবে। অধ্যাপকের ভাষা হবে আরও শুদ্ধ এবং জটিল, অন্যদিকে কৃষকের ভাষা হবে আরও সরল এবং প্রচলিত। ঠিক তেমনি নারী ও পুরুষের ভাষার পার্থক্য থাকবে, নবীন ও প্রবীণদের ভাষার পার্থক্য থাকেবে।
সামাজিক উপভাষার বৈশিষ্ট্য:
১. সামাজিক উপভাষা কোনো একটি সমাজকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়।
২. সামাজিক উপভাষা উচ্চারণ ও শব্দ ব্যবহারে পার্থক্য থাকে।
৩. সামাজিক স্তরভেদে এই ভাষার পার্থক্য সূচিত হয়।
৪. একটি সমাজের পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের শব্দ ব্যবহারের বৈচিত্র নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়।
৫. সামাজিক উপভাষায় সংকেত ভাষা (Code Language) ও ইতর (Slang) শব্দের ব্যবহার লক্ষণীয়।
সামাজিক উপভাষা হল কোনো নির্দিষ্ট সমাজের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর বা শ্রেণীর ভাষা। এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কারণে গড়ে ওঠে। সামাজিক উপভাষা একটি সমাজের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।
No comments